উন্নত প্রেগন্যান্সি ক্যালেন্ডার এবং ডিউ ডেট ক্যালকুলেটর
আপনার গর্ভাবস্থার প্রতিটি মুহূর্ত ট্র্যাক করুন বিস্তারিত টুলস ও তথ্যের মাধ্যমে।
আপনার ডিউ ডেট গণনা করুন
আপনার আনুমানিক ডিউ ডেট
গর্ভাবস্থার অগ্রগতি
Pregnancy Calendar কী?
Pregnancy Calendar হলো একটি টাইমলাইন যা গর্ভাবস্থার ৪০ সপ্তাহ (গড়ে ৯ মাস) ধাপে ধাপে দেখায়। এর মাধ্যমে একজন মা জানতে পারেন:
- এখন তিনি গর্ভাবস্থার কোন সপ্তাহে আছেন
 - শিশুর বিকাশের বর্তমান অবস্থা
 - এই সময়ে কী ধরনের যত্ন দরকার
 
Due Date Calculator কীভাবে কাজ করে?
Due Date Calculator মূলত Last Menstrual Period (LMP) অথবা Conception Date-এর উপর ভিত্তি করে সম্ভাব্য সন্তান জন্মের তারিখ (Due Date) নির্ধারণ করে।
কাজের ধাপ:
- শেষ মাসিকের প্রথম দিন লিখুন
 - গড় মাসিক চক্রের দৈর্ঘ্য (যেমন 28 দিন) সিলেক্ট করুন
 - “Calculate” বাটনে ক্লিক করুন
 - টুলটি গর্ভাবস্থার আনুমানিক শেষ তারিখ ও বর্তমান সপ্তাহ জানিয়ে দেবে
 
📌 মনে রাখবেন: Due Date একটি অনুমান—বেশিরভাগ বাচ্চা নির্ধারিত তারিখের ±২ সপ্তাহের মধ্যে জন্মায়।
মায়ের জন্য যত্ন ও করণীয়
গর্ভাবস্থায় যত্ন নেওয়ার কিছু মূল বিষয়:
- পুষ্টিকর খাবার: প্রোটিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ফল ও শাকসবজি
 - নিয়মিত চেকআপ: ডাক্তারকে নির্দিষ্ট সময় পর পর দেখানো
 - প্রেগন্যান্সি সাপ্লিমেন্টস: ফোলিক অ্যাসিড, ভিটামিন D, আয়রন
 - পর্যাপ্ত পানি পান: দিনে অন্তত ৮–১০ গ্লাস
 - পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও হালকা ব্যায়াম
 - মানসিক শান্তি: স্ট্রেস কমানো, মেডিটেশন করা
 
শিশুর যত্নের জন্য সতর্কতা
- অ্যালকোহল ও ধূমপান একেবারে এড়িয়ে চলা
 - ওষুধ খাওয়ার আগে ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করা
 - ইনফেকশন থেকে বাঁচতে স্বাস্থ্যবিধি মানা
 - উচ্চ ঝুঁকির (High-Risk) লক্ষণ যেমন রক্তপাত, তীব্র ব্যথা, কম নড়াচড়া হলে দ্রুত ডাক্তার দেখানো
 
গর্ভাবস্থায় শিশুর সপ্তাহভিত্তিক বিকাশ – মায়ের জন্য পূর্ণাঙ্গ গাইড
গর্ভাবস্থার ৪০ সপ্তাহ একটি অবিশ্বাস্য যাত্রা। এই সময়ের মধ্যে আপনার শিশুটি এক কোষ থেকে শুরু করে পূর্ণাঙ্গ মানব শিশুর রূপ নেয়। প্রতিটি সপ্তাহে তার বৃদ্ধি, ওজন, আকার ও দক্ষতায় পরিবর্তন আসে। নিচে সপ্তাহভিত্তিক শিশুর বিকাশ এবং মায়ের করণীয় তুলে ধরা হলো।
সপ্তাহ ৪ – পোস্তদানার আকার
এ সময় আপনার শিশুটি মাত্র কয়েক মিলিমিটার লম্বা। প্লাসেন্টা গঠন শুরু হয়, যা শিশুর খাবার ও অক্সিজেন সরবরাহ করবে।
মায়ের করণীয়: ফোলিক অ্যাসিড সাপ্লিমেন্ট চালিয়ে যান, ধূমপান ও অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন।
সপ্তাহ ৮ – রাস্পবেরির আকার
শিশুর হাত-পায়ের ছোট্ট কুঁড়ি দেখা দেয় এবং হার্টবিট স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
মায়ের করণীয়: প্রাথমিক আল্ট্রাসাউন্ড করাতে পারেন, যাতে শিশুর স্বাস্থ্য যাচাই হয়।
সপ্তাহ ১২ – লেবুর আকার
অঙ্গপ্রত্যঙ্গ প্রায় সম্পূর্ণ গঠিত, শিশুটি এখন নড়াচড়া শুরু করে যদিও আপনি তা এখনো অনুভব করবেন না।
মায়ের করণীয়: পুষ্টিকর খাবার যেমন প্রোটিন, শাকসবজি ও ফল খান।
সপ্তাহ ১৬ – অ্যাভোকাডোর আকার
শিশুর হাড় শক্ত হতে শুরু করে এবং মুখের অভিব্যক্তি তৈরি হচ্ছে।
মায়ের করণীয়: আয়রন ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করুন, যাতে হাড় মজবুত হয়।
সপ্তাহ ২০ – কলার আকার
এখন আপনি শিশুর নড়াচড়া বা ‘কিক’ অনুভব করতে পারেন।
মায়ের করণীয়: দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক আল্ট্রাসাউন্ড করান, যা শিশুর বৃদ্ধি ও অবস্থান নির্ণয় করবে।
সপ্তাহ ২৪ – ভুট্টার আকার
শিশুর শ্রবণশক্তি গড়ে উঠছে, সে আপনার কণ্ঠস্বর শুনতে পায়।
মায়ের করণীয়: নরম ও শান্ত সঙ্গীত শুনুন, শিশুর সঙ্গে কথা বলুন।
সপ্তাহ ২৮ – বেগুনের আকার
চোখ খোলা শুরু হয় এবং শিশুর ঘুমের প্যাটার্ন তৈরি হতে থাকে।
মায়ের করণীয়: রক্তচাপ ও রক্তের শর্করার পরীক্ষা করান, গর্ভকালীন ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সতর্ক থাকুন।
সপ্তাহ ৩২ – ফুলকপির আকার
শিশুর চর্বি জমতে শুরু করে এবং শরীরের গোলাকৃতি বাড়ে।
মায়ের করণীয়: পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন, ভারী কাজ এড়িয়ে চলুন।
সপ্তাহ ৩৬ – তরমুজের আকার
শিশুটি জন্মের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, মাথা নিচের দিকে অবস্থান নেয়।
মায়ের করণীয়: হাসপাতালের ব্যাগ প্রস্তুত রাখুন, ডাক্তারের সঙ্গে প্রসব পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করুন।
সপ্তাহ ৪০ – পূর্ণাঙ্গ শিশু
এখন আপনার শিশু পৃথিবীর আলো দেখতে প্রস্তুত।
মায়ের করণীয়: প্রসবের লক্ষণ যেমন পানি ভাঙা বা তীব্র সংকোচন হলে দ্রুত হাসপাতালে যান।
উপসংহার:
Pregnancy Calendar ও Due Date Calculator শুধুমাত্র একটি টুল নয়, এটি মা ও শিশুর যাত্রার একটি নির্দেশিকা। সঠিক তথ্য ও যত্নের মাধ্যমে একজন মা সুস্থ ও নিরাপদভাবে গর্ভাবস্থার সময় পার করতে পারেন।


